খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে খুলনা নাগরিক সমাজের উদ্যোগে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এই অপপ্রয়াসের মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষিত আশা সম্পন্ন করার আকর্ষণে পেট্রোবাংলার হস্তক্ষেপ ও কার্যকলাপের স্বচ্ছতা কামনা করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নগর ভবনে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও কেসিসি প্রশাসক মো. ফিরোজের কাছে এই স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. আ ফ ম মহসীন, সদস্য সচিব এড. মোঃ বাবুল হাওলাদারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মূলত, স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে, ২০১২ সালে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের জন্য পেট্রোবাংলার অধীনে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি ভেড়ামারা থেকে খুলনায় পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করে। তবে, যথাসময়ে এই প্রকল্পটি অজানা কোনও কারণে স্থগিত ঘোষণা করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেওয়া হয়। এর ফলে রাষ্ট্রীয় পরিমাণ অর্থের অপচয় হয় এবং এই প্রকল্পের উন্নয়ন প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও সম্ভাবনা থেকে বঞ্চিত হয়। ভবিষ্যত পরিকল্পনায় ভোলা-বরিশাল-খুলনা রুটে গ্যাস সরবরাহের প্রকল্পেরও স্থগিতাদেশের কারণে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আটকে যায়, যা স্থানীয় জনগণের আশার ঝলককে হ্রাস করে। এর পাশাপাশি, স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে, খুলনার পুরনো পাটকলগুলো রেহাই না পেয়ে বন্ধ হয়ে যায় এবং শিল্পনগরী হিসেবে এর ঐতিহ্য ধ্বংস হয়। তবে, যদি গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হয়, তবে বন্ধ কারখানাগুলোর যান্ত্রিক উন্নতিনির্দেশের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জমি ও অবকাঠামো পুনরায় সক্ষম হবে। এই অঞ্চলে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সমুদ্রবন্দর এবং পদ্মাসেতুর নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হলে, উৎপাদন খরচ কমবে এবং সেই সঙ্গে নতুন শিল্পকারখানা ও উদ্যোক্তা বৃদ্ধি পাবে। এই অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়বে, দেশের অর্থনীতিতে মূখ্য ভূমিকা রাখবে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দেশীয় সম্ভাবনাগুলো পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। খুলনায় শিল্পের প্রসার ও বন্ধ কারখানা চালু হলে, শুধু এই অঞ্চলের মানুষই নয়, সারা দেশের জন্য সুফল আসবে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা শুধুমাত্র একটি দয়ার বিষয় নয়, বরং এটি জাতীয় উন্নয়ন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। একটি অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকে উপেক্ষা করে উন্নয়ন সম্ভব নয়। সীমিত সম্পদ ও ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরসহ অন্যান্য সুবিধার উন্নয়নই এই অঞ্চলের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে। বর্তমান সরকারের কাছে আমরা আশা করি, এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে এবং দেশের সমগ্র উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রাম থেকে শহর, সবখানেই সমান উন্নয়নের আওতা দরকার, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির মূলকাঠামো।