বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ১৭ নভেম্বর (সোমবার) দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাম্প্রতিক রায়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে চলা ফ্যাসিবিদ্বেষী রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এই বছর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অবশেষে ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। সভায় বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, সাধারণ জনগণ গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলার নামে নিপীড়নসহ বিভিন্ন দুঃসহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে, ছাত্র-জনতা, শ্রমিকসহ সব শ্রেণির মানুষের আত্মদান, আহত হওয়া ও স্থায়ী ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার পরই এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। বিএনপি সংক্ষেপে জানায়, দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলের প্রত্যাশা ছিল—স্বৈরশাসন চলাকালীন সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডের বিচার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে রায় ঘোষণা হয়েছে, তাকে দলটি ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সম্পন্ন বিচার’ হিসেবে বিশ্লেষণ করে। রায় অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকে সর্বোচ্চ শাস্তি এবং পুলিশে সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে সহযোগিতার জন্য পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়াকে বিএনপি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক স্বাভাবিক এবং সুবিচারমূলক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে। সভায় আরও বলা হয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি জনগণের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে এবং অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচার পাওয়ার দাবি তুলছে। পাশাপাশি তারা মনে করে যে, দীর্ঘদিন ধরে গুম, খুন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার পরিবারের ক্ষত কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে, এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে।