বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ মোট আট দল। মোক্ষম দাবির মধ্যে রয়েছে নভেম্বরে গণভোট সম্পন্ন করা এবং তার জন্য একটি ধারাবাহিক five দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা। বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আট দল যোগ দিয়ে তাদের লক্ষ্য ও দাবি প্রকাশ করে।
পরবর্তী কর্মসূচির অংশ হিসেবে, আগামী ৩০ অক্টোবর নির্বাচনী সংস্থার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এরপর, ওই দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আলোচনা ও পরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য ৩ নভেম্বর এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের শেষে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, গণভোট ছাড়া জাতীয় সংবিধান ও আইনের উপর ভিত্তি করে স্থিরতা আসবে না। তারা সবাই একমত পোষণ করেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত, যা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বশর্ত।
তাদের মতে, ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিকল্পনার রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে, যেখানে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কালো টাকা, ভোটের কেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি ও অনিয়ম প্রতিরোধসহ গণতন্ত্রের মূল বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে তারা জোর দাবি করেছেন। আইনী মাধ্যমে উন্নত মানের সংসদ ও দীর্ঘস্থায়ী সরকারের জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে তারা মত প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেশের বহু রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক ও গবেষকসহ সাধারণ মানুষ একমত পোষণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে কিছু পরিবর্তন আনতে সরকার ও সংস্থাদের প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তারা জুলাইয়ের জাতীয় সনদ কার্যকর, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট ও ২০২৬ সালে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য দফায় দফায় দাবি জানিয়ে আসছেন।
সমস্ত দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য, তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও জনগণের দাবিকে সামনে রেখে সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া, নেতৃবৃন্দ একসাথে দাবি করেন:
1. জুলাইয়ের জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও এই বছর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট সম্পন্ন করা।
2. পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করা যেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বে-প্রত্যাশিত নির্বাচনের মান সম্মত হয়।
3. অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমান সুযোগ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।
4. ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
5. স্বৈরাচারী রাষ্ট্রদুর্বৃত্তদের সহযোগী রাজনৈতিক দল ও সংগঠন, যেমন জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কর্মকা- নিষিদ্ধ করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রতিনিধিরা, যারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে দেবার জন্য সম্মিলিতভাবে এই আন্দোলনে একত্রীকরণে গভীর অনুরোধ জানান।