1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

হাতকড়া ও বেড়ি পরিয়ে ভারতে ফিরিয়ে আনা হলো ৫০ তরুণকে

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

উন্নত জীবনের আশায় ভারতের তরুণেরা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। অনেকের জন্য এটি ছিল স্বপ্নের মতো এক অভিযাত্রা, যার জন্য তারা জমি বিক্রি, ঘর বন্ধক রেখেছিলেন এবং এজেন্টদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তবে সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। অবৈধভাবে বসবাসের দায়ে মার্কিন প্রশাসন তাদের হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে হরিয়ানার ৫০ জন তরুণ দেশে ফিরেছেন। তাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। রাজ্য প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এই তরুণদের মধ্যে ১৬ জন কারনাল, ১৪ জন কাইথাল, ৫ জন কুরুক্ষেত্র ও ১ জন পানিপথ জেলার বাসিন্দা। তারা সবাই ‘ডানকি রুট’ ব্যবহার করে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার দেশগুলো পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। কেউ কেউ সেখানে কয়েক বছর বসবাস করেছেন, আবার কেউ মাত্র কিছু মাস। কেউ আবার ফেরত পাঠানোর আগে কারাভোগও করেছেন।

কারনালের ২৬ বছর বয়সী অঙ্কুর সিং জানিয়ে বলেন, ২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তার খরচ হয় প্রায় ২৯ লাখ রুপি। চার মাসের দীর্ঘ যাত্রায় তিনি দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ পেরিয়ে গিয়েছিলেন। অঙ্কুর বলেন, “সব কিছু ভালোই চলছিল, কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জর্জিয়ায় একটি মদের দোকানে কাজ করার সময় ধরা পড়ি।”

তারপর তাকে আটক করে রাখা হয় এবং ২৪ অক্টোবর ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। এই ফ্লাইটে হরিয়ানা ছাড়াও পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, গুজরাট এবং গোয়া থেকেও কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দুইহাজার পাঁচশ’ ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আটটি সামরিক, চার্টার্ড ও বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ফেরত আনা হয়েছে। অধিকাংশই পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও গুজরাটের বাসিন্দা।

ফেরত আসাদের মধ্যে ছিলেন হরিয়ানার ঘোরাউন্দা ব্লকের হুসন (২১)। তার তিন বোনের একমাত্র ভাই হুসন, তার জন্য পরিবারকে ৪৫ লাখ রুপি এজেন্টদের দিতে হয়েছিল। তার কাকা সুরেন্দর সিং বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পরই হুসন ধরা পড়ে। পরিবার জমি বিক্রি করেছিল, কিন্তু সব অকর্মণ্য হয়ে গেল।”

একইভাবে কারনালের কালসী গ্রামের শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান হরিশ এসসি, ২০২৩ সালে কর্মী ভিসায় কানাডা যান। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন এবং দোকানে কাজ করার সময় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আটক হন।

কাইথাল জেলার তারাগড়ের নরেশ কুমার এক বছর বেশি সময় জেলে ছিলেন। তিনি বলেন, “ফ্লাইটে ওঠানোর সময় আমাদের হাতকড়া পরানো হয়, তবে কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার হয়নি। আমি সেখানে ১৪ মাস জেলে ছিলাম।”

নরেশ আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তাকে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার রুপি দিতে হয়েছিল এজেন্টদের, যারা কম খরচের প্রলোভন দিয়েছিলেন। এই টাকা জোগাতে তার পরিবার জমি বিক্রি ও ধার করেছে।

কাইথাল জেলার পুলিশ সুপার উপাসনা জানান, রোববার বিকেলে ১৪ জন তরুণকে দিল্লি থেকে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন আবগারি মামলার পলাতক আসামি ছিলেন। জিন্দ জেলায় এসপি কুলদীপ সিং বলেন, তার জেলার তিনজন তরুণও ফেরত এসেছে এবং তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo