1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

জুলাই স্বাক্ষরের আগে পিআর পদ্ধতি নিশ্চিতের দাবি জামায়াতের

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতিকালের গুরুত্বপূর্ণ দাবি জানিয়েছে যে, জুলাই মাসে স্বাক্ষরিত সনদে নিশ্চিত করতে হবে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি। দলটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে এবং জনগণের মতামত যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পিআর পদ্ধতি সম্পর্কিত বিষয়টি যেন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন এবং নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পর্যায়ে বৈঠক ও আলোচনা করে এটি বাস্তবায়ন করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন আলোচনাসভা, সেমিনার ও সম্পাদকীয়তে এই পদ্ধতির জনপ্রিয়তা ও কার্যকারিতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ পিআর পদ্ধতিতে ভোট দিতে চায়, এটি স্পষ্ট একটি গণতান্ত্রিক অধিকার যা একান্ত প্রয়োজন।

অতীতে কিছু দল ও কুচক্রী মহল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন, কিন্তু তার যুক্তি হলো, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি জনপ্রিয় এবং কার্যকর। তিনি সরকারের কাছে আবারো জোর দিয়ে বলেন, জুলাইয়ের স্বাক্ষরের আগে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

এছাড়াও, তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, দেশের কিছু শক্তিশালী গোষ্ঠী ও ফ্যাসিবাদী দের দোসররা দীর্ঘদিন থেকে দেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক মূলধারাকে বাধাগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে, বিএনপি, ইনু-মেননসহ অন্য কয়েকটি দল তাদের পছন্দের নেতা ও কর্মকাণ্ড চালাতে সরকারি বা প্রশাসনিক পদে হস্তক্ষেপ করছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে আবারও বিতর্কিত ও হঠকারি নির্বাচন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, অনেকের মুখে দেশের স্বার্থের কথা শোনা গেলেও, তারা প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের সংস্কারে সহযোগিতা করছে না। সব দলের অংশগ্রহণ ও সমান সুযোগের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই।

প্রসঙ্গক্রমে, তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি নতুন কিছু নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও কার্যক্ষম। বাংলাদেশেও নানা আলোচনা, সেমিনার ও মতবিনিময়ে এই পদ্ধতির সুফল তুলে ধরা হয়েছে। তাই, তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জুলাইয়ের স্বাক্ষরের আগে জাতীয় স্বার্থে এই পদ্ধতি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

অন্যদিকে, মিয়া গোলাম পরওয়ার বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট দের দোসর ১৪ দল, ইনু-মেনন ও সংশ্লিষ্ট দলের নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় টিকে থাকতে নানা অপকর্ম ও ষড়যন্ত্র করছে। এই সমস্ত চক্রান্ত ও দুষ্টচক্রের কারণে দেশের স্বার্থ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এরূপ অপরাধীদের বিচারের জন্য নিয়মিত ট্রাইব্যুনাল গঠন হয়েছে, সেই বিচার প্রক্রিয়াও ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে, তিনি উল্লেখ করেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, কালো শক্তির প্রভাবে সুষ্ঠু ও জনগণের দাবি মেনে নেওয়া নির্বাচন সম্ভব নয় বলে তিনি সতর্ক করেন।

এমন পরিস্থিতিতে, রাজধানীতে জামায়াতের উদ্যোগে এক বিশাল গণমিছিল হয়েছে। জুমার নামাজের পর এই মিছিলের আয়োজন করা হয়, যা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়। এতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর নেতৃবৃন্দ ও হাজারো দলীয় কর্মী অংশ নেন। তাৎক্ষণিক, দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, এই গণমিছিল দেশের জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক এক অংশ। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের দাবির প্রতি সম্মান দেখানো উচিত এবং অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

মিছিলের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানের মাধ্যমে তাদের দাবি ও অবস্থান জানান, শান্তিপূর্ণভাবে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মিছিল শেষ হয়। এ সময় আশপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

অতঃপর, দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের মৌলিক অধিকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন, সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের জন্য এই ধরনের কর্মসূচি অত্যন্ত জরুরি। মূলত, তারা নিশ্চিত করেছেন যে, তাদের এই আন্দোলন শুধু জামায়াতের দাবি নয়, এটি সমগ্র জাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্য। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের শীর্ষ নেতারা ঘোষণা করেন, এই আন্দোলন ও দাবি জারি থাকবে এবং সকলের সমর্থন ও একাগ্রতা দিয়ে এই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo