1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

ভারতীয় বিশ্লেষকদের মত, জনগণ ভোট যাকে দেবে, তাকেই মানতে হবে

  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আপ্রত্যাশিত দলবদল বা পালাবদলের কারণে অনেকক্ষেত্রে দিল্লির মনোভাব যেমন পরিবর্তিত হয়েছে, এখন ভারতের বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের জনগণ যেই প্রার্থী বা দলকে তাদের ভোট দেবে, তার সঙ্গে মানানসই হতে হবে। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনের পরিস্থিতি বিশ্লেষকরা ধৈর্য্যধার্য করে দেখার পরামর্শ দিচ্ছেন, এখনই কোনো ধরনের প্ররোচনায় অতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া শুরুকরার পরিবর্তে অপেক্ষা করাই উত্তম। ভারতের সাবেক শীর্ষজন্য আমলা ও প্রসার ভারতী বোর্ডের প্রাক্তন সিইও জহর সরকার বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের বুঝতে হবে এবং এ ব্যাপারে মানতেই হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, আমাদের উচিত অপেক্ষা করে দেখা, কোনও তৎপরতা বা হস্তক্ষেপ এড়ানো।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি ভারতের দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশ্লেষকদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনায় উঠে এসেছে ভারতে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মতামত। তবে বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, এ অনুষ্ঠানে বিস্তারিতভাবে কখন ও কীভাবে আলোচনা হয়েছে, তা জানানো হয়নি।

জহর সরকার বিশ্বাস আরও বলেন, যদি বাংলাদেশে নতুন সরকার ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে থাকে, তবে তা আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার একটি কেয়ারটেকার সরকার, যাদের জন্য অকারণে গুলি চালানো বা অতিরিক্ত আঘাতের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন সম্পন্ন হলে তারা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতা গ্রহণ করবে।

অপরদিকে, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ভারতের সাবেক হাইকমিশনার, বলছেন, যদি বাংলাদেশে ভুল করে কোনো সরকার ক্ষমতায় আসে, তবে তার নিরাপত্তা ও স্বার্থের জন্য এর পরিণতি কি হতে পারে, তা ভেবে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই আমাদের স্বার্থের জন্য প্রতিরক্ষা চালিয়ে যাব, তবে সবার সঙ্গে সহযোগিতা করার স্পিরিটও বজায় রাখব। তবে ভারতের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, যেখানে আমাদের সীমান্ত সংলগ্ন দেশগুলো তারা বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকলেও, তখনও আমাদের স্বার্থের প্রশ্ন আসে।

আলোচনা সভায় অংশ নেওয়া অন্য একজন বিশেষজ্ঞ বলা হয়েছেন, ওপি জিন্দাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলছেন, সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি দেখেছেন আয়ত্তের বাইরে যাচ্ছে জামায়াতের শক্তি। তিনি ধারণা করছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরাসরি অংশ নাও করতে পারে, আর ভারতেরও সেই বাস্তবতা বুঝতে হবে।

শ্রীরাধা দত্তের বিশ্লেষণে উঠে আসে, গত তিনটি নির্বাচন বিতর্ক বা বিএনপি প্রত্যাখ্যানের মধ্যে পরিচালিত হওয়ার কারণে ভারতের দৃষ্টিতে তারা নাদুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এ পরিস্থিতি স্বীকার করে নিতে হবে, ভালো বা মন্দ, সেটি ওরা নিজেরাই ঠিক করবে। এর ফলে, বিভিন্ন দল ও নেতাদের মালিকানা ও মর্যাদা দেওয়ার জন্য রাজনীতিতে নমনীয়তা দেখাতে হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক শক্তিবৃদ্ধি এবং জামায়াতে ইসলামী নতুন করে শক্তিশালী হওয়ার লক্ষণ দৃশ্যমান। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও জামায়াতের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা তাদের অপরাধের জন্য নতুন রূপে প্রকাশিত হচ্ছে। হালনাগাদ ঢাকা সফরে, জামায়াতের নেতা সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে সাক্ষাতের পর, শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, যদি সরকার গড়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক দল পাওয়া যায়, তাহলে কি তারা শরিয়া আইন চালু করতে চান। তিনি উল্লেখ করেছেন, তারা কখনোই এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলেনি যে তারা সরকার এলে শরিয়া আইন আনতে চায়।

শ্রীরাধা দত্তের মতে, জামায়াতের আসলে রয়েছে এক ‘চার্ম অফেনসিভ’, যা দেখানো হয় অপ্রতিরোধ্য ও মারমুখী শক্তি হিসেবে, কিন্তু বাস্তবে তাদের কার্যকলাপ ভিন্ন। ভারতেও এটা স্পষ্ট, জামায়াতের মূল পরিচয় মুসলিম ব্রাদারহুডের অংশ, যেখানে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও হর্ষবর্ধন শ্রিংলার মত বিশ্লেষকরা মনে করেন, জামায়াত কখনোই বাস্তবে পাল্টাবে না।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo