1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

গাজার চিত্র ভয়ংকর: ৪০ শতাংশ ভূমি দখল এবং মানবিক সংকট অব্যাহত

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গাজা শহর এখন এক দারুণ মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে শিশুরা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে ভুগছে। অনেক শিশু ওজন কমে গিয়ে মারাত্মক আহত। উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, ১৮ মাস বয়সী শিশু আলি আবু আজরা তার বয়সের তুলনায় খুব কম ওজনের হয়ে পড়েছে; তার স্বাভাবিক ওজন হওয়ার কথা ছিল সাত-আট কেজির মধ্যে, কিন্তু বর্তমানে তার ওজন মাত্র তিন কেজি। দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির কারণে শরীর থেকে চর্বি ও পেশির টিস্যু ক্ষয়ে গেছে, ত্বক হাড়ের সঙ্গে লেগে থাকা অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। তার মা আনাদোলু জানান, আলি ডায়রিয়া, ফুসকুড়ি, জ্বর, খিঁচুনি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে নাজেহাল। এক সপ্তাহের মধ্যে ওজন একটি কেজি কমে গেছে; দুধ ও ওষুধের অভাবের কারণে তার জীবনহুমকি পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। গাজার অন্যান্য শিশুদেরও আসলে এই রকম দুরবস্থা চলমান।

আন্তর্জাতিক সংস্থা আলজাজিরা ও ইউনিসেফের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গাজা এখন মৃত্যু, আতঙ্ক ও দাফনের শহর হয়ে উঠেছে। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি শঙ্কার মুখে, শহরটি এখন ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ইসরায়েলি হামলার ফলে বহু পরিবারের স্বজনরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সম্প্রতি হামলায় শহরে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন স্থান জুড়ে ভারী বোমাবর্ষণে ব্যস্ত হয়েছে ইসরায়েলি সেনা, ধ্বংসের মুখে পড়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভবন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা গাজা শহরের ৪০ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করেছে, হামাসের শাসন ভেঙে ফেলতে এবং কমান্ডারদের জিম্মি থেকে ফিরিয়ে আনতে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দখলদার বাহিনীর হামলায় অন্তত ১১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এর মধ্যে শুক্রবার alone ৫০ জন মারা গেছে। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৬৪,২৩১ জন নিহত ও এক লাখ ৬১ হাজার ৫৮৩ জন আহত হয়েছেন। শিশুদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশ উদ্বেগজনক। প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে।

গত Thursday রাতে গাজা শহরের অনেক বাড়িঘরসহ তাঁবু ও আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে মায়েরা কষ্টের মধ্যে বলছেন, তাদের সন্তানদের দেখার জন্য হাসপাতালের বিছানায় পড়ে থাকা, রক্তাক্ত মুখ ও দেহ দেখছেন। একজন মা বলছেন, ‘আমি আমার ছেলেকে খুঁজে বের করতে গিয়ে দেখতে পেলাম, সে পড়ে আছে, তার নাক দিয়ে রক্ত জমে আছে। অন্যদিকে আমার মেয়েও রক্তে ভাসছে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় এখন ‘নরকের দরজা’ খুলে গেছে। কারণ ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহরের উঁচু টাওয়ারগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যা শহরটির ভেতরে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল এ ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণের জন্য কাজ করা তিনটি ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আল-হক, প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (পিসিএইচআর) এবং আল-মিজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস। এই সব সংস্থা গাজা পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের দখলদারির বিচার-তদন্তে সহযোগিতা করায় তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo