1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে রোহিঙ্গাদের সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে অভিযোগ

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫

নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তুলে নিজ অভিবাসনের স্বপ্ন ছুঁড়ে ফেলে বাংলাদেশ, তারপর সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হলো রোহিঙ্গাদের দাবি করেছেন ৪০ জন শরণার্থী। তারা বলছেন, রাজধানী দিল্লি থেকে আটক করে তাদের ধরে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়, যেখানে তারা জীবনের ঝুঁকি মোকাবেলা করছে। এই ঘটনা মিয়ানমারের ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে ঘটেছে, যেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য ভবিষ্যৎ রয়েছে অনিশ্চিত। জাতিসংঘের মতে, ভারতে থাকা এই রোহিঙ্গাদের জীবন এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে। ব্রিটিশ ব্রেকিং সংবাদমাধ্যম বিবিসি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনা অভিযানের পর বহু রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও বাংলাদেশে এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এক লাখের বেশি। বর্তমানে, ভারতে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেলেও, রীতিমতো চাপের মধ্যে থাকেন তারা। গত মে মাসের ৬ তারিখে দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ৪০ জন রোহিঙ্গাকে স্থানীয় পুলিশ ডেকে আনা হয়। বলানো হয়, তাদের ছবি ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহের জন্য। এরপর তাদের হিন্দুস্তানইন্দিরা বিমানবন্দর থেকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছে, বাসে চলন্ত তারা জানায়, তাদের গায়ে বাঁধা হয়েছিল প্লাস্টিকের রশি এবং মুখোশ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে, তাদের একটি নৌবাহিনীর বড় জাহাজে তোলা হয় যেখানে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ছিলেন। এই সময়ে তাদের সাথে মারধর, অবমাননা ও হয়রানি করা হয়। সাক্ষাৎকারে-ফলে জানা গেছে, তাদের অনেকের হাতে আঘাতের দাগ, বেধড়ক মারধর এবং অবমাননাকর আচরণ সহ—তাদের প্রশ্ন করা হয় কীভাবে তারা অবৈধভাবে ভারতে এসেছেন। এটি বিশেষ করে আশ্চর্যজনক যে, সাতজনের মধ্যে চারজন খ্রিস্টান রোহিঙ্গাকেও জিজ্ঞেস করা হয়, কেন ইসলাম ছেড়িয়ে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছেন। এমনকি, একজনকে কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযুক্ত করা হয়, যদিও তার সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর ৮ মে সন্ধ্যায়, ছোট ছোট রাবার নৌকায় করে সমুদ্রে নামাতে বাধ্য করা হয় তাদের, যেখানে হাত বাঁধা ও লাইফ জ্যাকেট পরানো ছিল। বলা হয়, তারা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে—কিন্তু আসলে তারা মিয়ানমারে ছিল। পরদিন ভোরে স্থানীয় জেলেরা তাদের খুঁজে পায়, এবং তাদের ফোন ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়, যেখানে তারা স্বজনদের খবর দেয়। এরপর থেকেই মিয়ানমারের বাহটু আর্মি তাদের সহায়তা দেয়, কিন্তু ভারতে থাকা পরিবারগুলো এখন বড় আতঙ্কে। জাতিসংঘের দাবি, ভারতের এচর্য্য এই রোহিঙ্গাদের জীবন ‘চরম ঝুঁকিতে’ ফেলেছে। সংশ্লিষ্ট ঘটনার প্রতিবাদে, মে মাসের শেষে, নুরুল আমিন ও তার আত্মীয়রা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, যাতে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় এবং এই নির্বাসন বন্ধ হয়। তবে ভারতের একটি আদালত এই অভিযোগকে “অবাস্তব কল্পনা” বলে আখ্যায়িত করে, এবং মামলাটি সেপ্টেম্বরে শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে, ভারতের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে; কেউ গা ঢাকা দিয়েছে, কেউ বাসায় থাকছে না। নুরুল আমিন বলছেন, “আমার কাছে শুধু ভয় কাজ করছে, কখনও ভারতের সরকার আমাদেরও সমুদ্রে ফেলে দিতে পারে। আমি এখন ঘর থেকেও বের হতে ভয় পাচ্ছি।” জাতিসংঘের প্রতিনিধি অ্যান্ড্রুজ বলেন, “রোহিঙ্গারা ভারতে থাকতে চায়নি, তারা রক্ষা পেতে পালিয়ে এসেছে মিয়ানমারের ভয়ংকর সহিংসতা থেকে।” এই ধরনের অভিযোগের তদন্ত এখন চলমান, এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজর রয়েছে এই ঘটনায়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo