ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চেতেশ্বর পূজারা এক সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার ছিলেন। ধৈর্য, দৃঢ়তা এবং অটল মানসিক শক্তির মাধ্যমে তিনি নিজস্ব একটি পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। অবশেষে, তিনি অবসরের ঘোষণা দেন, জানিয়ে থাকেন যে তিনি আর কখনো ভারতের জার্সি পরে মাঠে নামবেন না।
২০২৩ সালের জুনে ওভালে অস্ট্রেলিয়াদের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালই ছিল তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এরপর থেকে তিনি আর ভারতীয় জার্সি বলেই মাঠে দেখা যায়নি।
অবসরের বার্তায় পূজারা লিখেছেন, “ভারতের জার্সি গায়ে চাপিয়ে জাতীয় সংগীত গেয়ে যখন মাঠে নেমেছি, তখন সর্বোচ্চ দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। সেই মুহূর্তগুলো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে বলতে পারেন, সব ভালো কিছু শেষ হয় একদিন। তাই আমি অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানাচ্ছি, আমি ভারতীয় ক্রিকেটের সব সংস্করণ থেকে অবসর নিচ্ছি।”
২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরু থেকে তিনি ভারতের ব্যাটিংয়ের ভরসা হয়ে উঠেছিলেন। বিশেষ করে ‘নাম্বার থ্রি’ পজিশন ছিল তার শক্ত ঘাঁটি। তার সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারে ১০৩ টেস্টে ৭১৯৫ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১৯ সেঞ্চুরি এবং ৩৫ ফিফটি, গড় ৪৩.৬০। দেশের মাটিতে তার গড় ছিল আরও বেশি, ৫২.৫৮।
পূজারার নাম এলেই আসে ২০১৮-১৯ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা। অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে তার তিন সেঞ্চুরি ভারতকে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে পৌঁছেছিল। এরপরই তিনি আবারও দেখিয়েছেন অসাধারণ মানসিক দৃঢ়তা। কঠিন পরিস্থিতিতে ক্যামেরুন হ্যাজলউড, স্টার্ক ও কামিন্সের বিপরীতে চার টেস্টে ৯২৮ বল মোকাবিলা করে তিনি দলকে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড় করিয়েছেন। প্রতিটি ডিফেন্স ও ব্লক যেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ভরসার স্তম্ভ হয়ে উঠেছিল।
তাদের জন্য ক্রিকেট বিশে’ তাকে ‘দ্য ওয়াল ২.০’ নামে ডাকতে শুরু করে। কারণ, রাহুল দ্রাবিড়ের পর থেকে তিনি ভারতের টেস্ট ব্যাটিংয়ের প্রাচীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার গুণাবলীর মধ্যে গ্ল্যামারাস শট নয়, বরং কঠোর রক্ষণশীলতা এবং অটল মনোভাব ছিল তার অস্ত্র। দলকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে বারবার উদ্ধার করে তিনি জাতীয়তাবাদের এক অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন।