1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ
২০২৫ সালের শেষে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা বিজয় দিবসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিজয় কেতন উড়াল বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয়নি: বদরুদ্দীন উমর গুম-খুনের অভিযোগে ক্ষমা চেয়ে আয়নাঘরের কথা স্বীকার করলেন র‍্যাব ডিজি ঐক্যের ডাক হাসনাত আব্দুল্লাহর দেশের জন্য ক্ষতিকর চুক্তি বাতিলের দাবি করা হয়েছে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য চলমান অপচেষ্টা নতুন বাংলাদেশের যাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার রমেন রায়ের ওপর হামলার ঘটনাটি পুরোনো, তিনি চিন্ময়ের আইনজীবী নন

‘কেন বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’

  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮

স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে প্রশ্ন রেখেছেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তার নির্দোষ হলে চাকরিতে বহাল থাকবে, অথবা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে যদি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়, তবে বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করবে পুলিশ। কেন বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’

বুধবার (৬ জুন) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেছেন বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘যদিও তদন্ত হচ্ছে, তবে এখনও মনে হয় না পুলিশ মিতু হত্যার মূল কারণ খুঁজে বের করতে পেরেছে। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা? তাদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।’

এ প্রসঙ্গে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘সার্বিক বিষয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, তাতে আমরা মোটেও সন্তুষ্ট নই। সঠিক তদন্ত না করে নামমাত্র চার্জশিট জমা দিলে আমরা আদালতে নারাজি দেবো।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই দিন সকালে ছেলে মাহিরকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলা প্রসঙ্গে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ও (বাবুল আক্তার) এই হত্যা মামলার বাদী। কিন্তু সে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। তখন তো সে আমাদের সঙ্গে ছিল। যদি সে দোষী না হতো, তবে কথা বলতে কী সমস্যা ছিল তার।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘শোনা কথা- পুলিশ বাবুল আক্তারকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সেখানে আলাদা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে নাকি আসামিদের মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসা করেছিল। সেখানে নাকি বাবুল আক্তার তার স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছিল। এরপর সে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এর কিছুদিন পরে বাবুল আক্তার চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টাও করেছে। কিন্তু পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তাকে পুনঃনিয়োগ দেয়নি। এখানে বোঝা যাচ্ছে বাবুল আক্তার তার স্ত্রী (মিতু) হত্যার সঙ্গে জড়িত। তাই সে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।’

বাবুলের শ্বশুরের প্রশ্ন, ‘বাবুল আক্তার যদি নির্দোষ হয়, তবে কেনইবা চাকরি ছাড়লো? আর সে যদি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে কেন তাকে গ্রেফতার করা হলো না?’

বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে বাবুলের শ্বশুর বলেন, ‘বর্ণির সঙ্গে সম্পর্কের কারণে আকরামকে হত্যা করে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে এমন খবর অনেক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে আমরা অনেকদিন পরে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। গায়েত্রী সেন নামে এক নারীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকার বেশ কিছু প্রমাণও আমরা পেয়েছি। তাদের মধ্যে কিছু এসএমএস আদান-প্রদান হয়েছে, এছাড়াও বাবুল আক্তারকে কিছু বই উপহার দিয়েছে গায়েত্রী সেন। সেই বইগুলোতে তাদের হাতের লেখাও পাওয়া গেছে, তারা কোথায় কোথায় সাক্ষাৎ করেছে সে বিষয়গুলো পাওয়া গেছে। মোবাইলে পাঠানো কিছু এসএমএস ওই বইগুলোতে লিখে রেখেছে বাবুল। কিছু এসএমএস মিতুর মোবাইলেও পাঠিয়েছিল গায়েত্রী। সেগুলোর প্রতিটিতেই ছিল হুমকিস্বরূপ কথা।’

মিতুকে নির্যাতনের বিষয়ে বাবুল আক্তারের শ্বশুর বলেন, ‘মিতুর ওপর অনেক মানসিক নির্যাতন চলেছে। এই কারণে মিতু একাধিকবার সুইসাইড করতে চেয়েছিল। এসব কথা মিতুর ছেলে মাহির, বাসার কাজের মেয়ে এবং সেখানকার প্রতিবেশীরাও বলেছে। হত্যার ঘটনার আগে বাসাও চেঞ্জ করতে চেয়েছিল, কিন্তু মিতু তাতে রাজি হয়নি।’

তার অভিযোগ, ‘মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের আরও সহযোগী রয়েছে। এদের মধ্যে একজন মজিবুর রহমান, অপরজন কামাল। ঘটনা ঘটার সময় বাবুল আক্তারের কাছে ছিল তারা। মিতু হত্যাকাণ্ডের সময়কার বাবুল আক্তারের অঙ্গ-ভঙ্গিমা আর এখনকার অঙ্গ-ভঙ্গিমা এক নয়। তখন সে অভিনয় করেছিল।’

মিতুর বাবা আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (৫ জুন) আমার বাসায় দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বাবুল আক্তার আসেনি। তার দুই সন্তানকেও আসতে দেয়নি। গত দেড় বছর ধরে সে আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি। তার সন্তানরা আমাদের কাছে আসতে চাইলে, ফোনে কথা বলতে চাইলেও দেওয়া হয় না।’

মিতু হত্যাকাণ্ডের পরপর তো বাবুল আক্তারের পক্ষে কথা বলেছিলেন কিন্তু এখন তার বিপক্ষে কেন? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তখনও গণমাধ্যমের সামনে বলেছি, মিতু হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আসামি যেই হোক, তাকে গ্রেফতার করা হোক। কিন্তু তখন তো জানতে পারিনি যে বাবুল আক্তার এর সঙ্গে জড়িত। সে যে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা অনেকাংশেই বোঝা যায়। আর যদি সে জড়িত না হয়, তবে কেন সে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলো?’

উল্লেখ্য, ০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার কয়েক দিন আগে বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি নিয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তার সম্পৃক্ত কিনা, তা নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিনের মাথায় তাকে খিলগাঁওয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে ১৬ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়। এরপর তার আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলেও পুলিশ সূত্রে জানা যায়। তবে পরে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চাননি দাবি করে চাকরি ফিরে পেতে চেষ্টা করেছেন বাবুল আক্তার।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo