1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৩৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ
অল্প সময়ে অনেক কিছু অর্জন: অন্তর্বর্তী সরকারের নিষ্ঠার প্রতিফলন জাতিসংঘে বাংলাদেশ: ১৩ লাখ রোহিঙ্গার ভার আর বহন করা সম্ভব নয় শেখ হাসিনার রায় ঘিরে হত্যার হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার এই রায়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে: বদিউল আলম ট্রাম্পের দাবি: ভারত-পাকিস্তানকে ৩৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলাম শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা জরুরি : প্রধান উপদেষ্টা যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যায় আরও দু’জন ভাড়াটে খুনি গ্রেপ্তার: র‍্যাব জামায়াতের দাবি: ভোটকেন্দ্রে অন্তত পাঁচজন সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সঙ্গে সাংবাদিক মিজানুরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই ময়মনসিংহে ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা, সাহসী প্রতিরোধে বড় ক্ষতি এড়ানো

নরেন্দ্র মোদির গোপন ৩৯০০ কোটি রুপির বিনিয়োগে আদানিকে রক্ষা

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর যখন বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি গৌতম আদানিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের স্বার্থে একটি গোপন পরিকল্পনা করেছিলেন। ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এক বৃহৎ বিমা সংস্থা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (এলআইসি) ব্যবহার করে তিনি এই বিতর্কিত শিল্পপতিকে অর্থায়নের জন্য প্রায় ৩৯০০ কোটি রুপির বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেন। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে আসা অভ্যন্তরীণ নথিগুলির ভিত্তিতে জানা গেছে, ২০২৫ সালের মে মাসে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রালয়, অর্থনৈতিক পরিষেবা বিভাগ (ডিএফএস), এলআইসি এবং নীতি নিয়ামক সংস্থা নীতি আয়ের যৌথভাবে এই বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করে। মূল উদ্দেশ্য ছিল আদানি গ্রুপের বন্ড ও ইক্যুইটির উপর ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের প্রতি বিশ্বাস বাড়ানো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আদানির পোর্টফোলিওর একটি ৫৮৫ মিলিয়ন ডলারের বন্ড ইস্যুর জন্য এলআইসি একাই অর্থায়ন করে। মে মাসের শেষে আদানি গ্রুপ ঘোষণা করে, এই বন্ডের পুরো অর্থায়নের জন্য একমাত্র বিনিয়োগকারী হিসেবে তারা তহবিল সরবরাহ করেছে এলআইসি। এই অর্থায়নে সমালোচকেরা বলছেন, সাধারণ করদাতাদের অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে।

এই বিনিয়োগের লক্ষ্য ছিল আদানির প্রতি ‘আস্থার বার্তা’ পাঠানো এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। তবে, ঠিক এক বছর আগে, আদানি গ্রুপের ঋণ স্তর ২০ শতাংশ বেড়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে।

বর্তমানে আদানি গ্রুপ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় তদন্তের মুখোমুখি। মার্কিন বিচার বিভাগ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) তাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলারের ঘুষ, জালিয়াতি ও অপরাধমূলক লেনদেনের অভিযোগ এনেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, জ্বালানি চুক্তি জেতার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অবৈধ লেনদেন হয়। যদিও আদানি এই সব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

২০২৩ সালে, মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে স্টক ম্যানিপুলেশন ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুললে বেশ কিছু বড় ব্যাংক তাদের ঋণ সহায়তায় সংকোচপ্রবণ হয়।

এমন পরিস্থিতিতে, ডিএফএসের অভ্যন্তরীণ নথিগুলিতে ভারতীয় কর্মকর্তারা আদানিকে ‘দূরদর্শী উদ্যোক্তা’ হিসেবে বর্ণনা করেন, কারণ তারা মনে করেন, বন্দরে, জ্বালানি ও অবকাঠামো ক্ষেত্রে আদানির ব্যবসাগুলি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এলআইসি, যা লাখ লাখ ভারতীয়র জীবন বিমা করে এবং তাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের, একটি রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত বেসরকারি সংস্থায় এত বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাধীন বিশ্লেষক হেমেন্দ্র হাজারি মন্তব্য করেন, ‘এলআইসির মতো একটি প্রতিষ্ঠান এ ধরনের বড় বিনিয়োগ সাধারণত প্রত্যাশিত নয়। যদি কিছু হয়, তবে শুধুমাত্র সরকারই এই পরিস্থিতি সামলাতে পারে।’

প্রতিবেদনের প্রকাশের পরে বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী মোদি ও আদানি গ্রুপের ওপর তীব্র আক্রমণ শুরু করে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র টুইটে বলেন, ‘ভারতীয় করদাতাদের ৩০ হাজার কোটি রুপি কীভাবে আদানির পিগিব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি দেখার জন্য মনোযোগ দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, মোদি সরকার আদানিকে অর্থায়ন করছে এবং উল্টো দেশের জনগণকেই এখন তাকে রক্ষা করতে হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর গৌতম আদানি ও তার সাত সহযোগীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ ওঠার পর মাত্র চার ঘণ্টার ট্রেডিংয়ে এলআইসির ৭ হাজার ৮৫০ কোটি রুপি ক্ষতি হয়। তিনি এটিকে ‘মোদানি মেগাস্ক্যাম’ বলে অভিহিত করেন, যেখানে অভিযোগ ছিল—জোরপূর্বক সম্পদ বিক্রি, সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ক্ষমতার অপব্যবহার।

অভিযোগের জবাবে, আদানি গ্রুপ এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাদের কোনও ভূমিকার কথা ‘সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার’ করে। তারা এই অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করে, এবং জানিয়েছে, তাদের উত্থান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo