1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

বাষট্টিতে নগরবাউল জেমসের জন্মদিন

  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫

উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও সম্মানিত গায়ক মাহফুজ আনাম জেমসের ৫৯তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি রকস্টার, যিনি দীর্ঘকাল ধরে বাংলাসাহিত্যে এবং সংগীত জগতে অবিস্মরণীয় স্থান করে নিয়েছেন। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে হলেও, আজ তিনি ভক্তদের কাছে ‘নগর বাউল’ নামে পরিচিত। প্রতিভার অপার বিকাশের মধ্য দিয়ে তিনি আজ ৬২ বছর পেরিয়ে ৬৩ বছরে প্রবেশ করেছেন।

জেমসের জীবনকাহিনী একদিকে চড়াই-উৎরাইয়ে ভরা, অন্যদিকে তার সফলতার গল্প অনুপ্রেরণাময়। সংগীতের প্রতি তাঁর প্রেম এবং প্রতিভা তাঁকে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে। তার গানে মনোহরা আবেগ, দৃঢ়তা ও স্বকীয়তা প্রতিটি শ্রোতার মনে দাগ কাটে। ভক্তদের কাছে তিনি শুধুমাত্র একজন শিল্পী নন, বরং গুরুরূপ।

বয়সের সাথে সাথে এই রক লিজেন্ডের চিরতরুণত্বের রহস্য হলো তার অসীম আগ্রহ ও ভালোবাসা গানের প্রতি। আজকের এই দিনেও ঝাকড়া চুলে, গিটার হাতে তিনি অন كالীন রূপে এক নতুন জাদু সৃষ্টি করেন। তার বয়স তার কাছে কেবলমাত্র একটা সংখ্যা; আজও গানে গানে তিনি ভক্তদের মাতোয়ারা করে থাকেন।

জেমসের জীবনযাত্রার গল্প বেশ রোমাঞ্চকর এবং অনুপ্রেরণামূলক। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী, পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছোটবেলা থেকে সংগীতের প্রতি দুর্বার আগ্রহ জন্মায় তার মধ্যে, কিন্তু পরিবারের পছন্দ ও প্রত্যাশা আলাদা থাকায় তিনি সংগীতের পথে চলে যান। বাবার সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে গিয়ে তার সংগীতের পথচলা শুরু হয়।

১৯৮০ সালে তিনি ‘ফিলিংস’ নামে একটি ব্যান্ড গঠন করেন, যেখানে তিনি নিজে গিটার ও ভোকাল দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম আলবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়, তবে এই অ্যালবাম তখন দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। এরপর ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় তার ‘অনন্যা’ অ্যালবাম, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং তাকে সংগীত অঙ্গনে নতুন উচ্চতা প্রদান করে।

এরপর তার বিকাশ অব্যাহত থাকে—১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ সালে ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’ এবং ১৯৯৯ সালে ‘কলেকশন অফ ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো ব্যাপক স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও তার অন্যান্য অ্যালবামগুলির মধ্যে রয়েছে ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘বিজলি’, ‘অনন্যা’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’, ও ‘কাল যমুনা’।

অ্যালবাম গানে ছাড়িয়ে তিনি চলচ্চিত্রেও প্লেব্যাক করেছেন, যেখানে তিনি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি সিনেমায় কিছু জনপ্রিয় গান গেয়ে তিলমাত্র ভক্তে-শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। বলিউডে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ (গ্যাংস্টার), ‘চল চলে’ (ও লামহে), ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ (লাইফ ইন অ্যা মেট্টো) ও ‘বেবাসি’ (ওয়ার্নিং) গানগুলি ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। দেশের চলচ্চিত্র ‘সত্তা’তেও গানের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন।

আজকের এই বিশেষ দিনটি জে়মসের জন্য শুধু জন্মদিন নয়, বরং তার অজস্র গীতিনাট্য ও সুরের উৎসব। তার জীবন সংগ্রাম, সংগ্রহ ও অসীম ভালোবাসা সংগীতের মাধ্যমে আমাদের প্রেরণা দিতে থাকে। তিনি অবিরত অগণিত মানুষের হৃদয়ে যুগের পর যুগ প্রেম ও শ্রদ্ধার স্থান করে রাখতে থাকবেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo