1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

ডাকসু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যত জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে, বলে দাবি মান্নার

  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার পথে অন্যতম মাইলফলক হয়ে উঠছে। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ: সংস্কার বাস্তবায়নের পথরেখা’ এবং এটি আয়োজন করেছিল গণতন্ত্র মঞ্চ।

মান্না সতর্ক করে বলেন, বর্তমানে রাজনীতি মূলত মিথ্যাচার, চাঁদাবাজি এবং ক্ষমতা দখলের সংগ্রামের রূপ নিয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নয়। তিনি বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো এখনো সুযোগ পেলে দাঁড়িয়ে উঠতে পারে, কারণ সাধারণ জনগণ বিকল্পের খোঁজে রয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামি এবং ছাত্রশিবিরের মতো কুচক্রী দলগুলো এখন নিজস্ব শক্তি বৃদ্ধি করছে, যা আগে কোনোভাবেই দেখা যায়নি। আগে তারা মাথা না তুলে থাকতে পারত, এখন তারা রাজনৈতিক দুনিয়ায় সুন্দরভাবে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে, এবং বড় দলগুলোর জন্যও তারা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। তিনি যোগ করেন, মুক্তি ও স্বাধীন চিন্তাধারা দিয়ে এখন ছাত্ররা নিজেদের ভিন্ন প্রমাণ করছে, যা বড় দের জন্য এক ধরণের সতর্কবার্তা।

মান্না আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ডাকসু নির্বাচন এবং মানুষের প্রত্যাশা উল্লেখ করে, এখনো অনেকেই প্রশ্ন করেন, ভোট কি হবে? তবে তিনি বলছেন, এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, সুষ্ঠু ভোটাধিকার সম্ভব; যদিও অনেকের জন্য এটি অবিশ্বাস্য শোনায়। ছাত্রসমাজের সাহসকেও তিনি স্বাগত জানান। অতীতে স্বাধীনভাবে প্রার্থী দাঁড়ানো খুবই দুর্লভ ছিল, এখন তা হওয়ায় পরিবর্তনের ভবিষ্যদ্বাণী দৃঢ় হয়। তিনি বিশেষ করে উল্লেখ করেন যে, এখন আর বড় জনসভা নয়, বরং সোশ্যাল মিডিয়া ও তরুণ প্রজন্মের মতো নতুন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রাজনীতি গড়ে উঠছে। এই বয়সের ছাত্ররা বুঝতে পেরেছে, রাজনীতি মানে আন্তরিকতা, সংগ্রাম এবং অঙ্গীকার; এটি লুটপাট বা ক্ষমতার শর্টকাট রাস্তা নয়।

মান্না আরো বলেন, ছাত্ররা যেন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। তিনি অনুমান করেন, ভবিষ্যতে অখণ্ডতা ও সংস্কার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি কথাকে সামনে রেখে বলেন, সংকটের সমাধানে সুপ্রিম কোর্টের রায় গ্রহণযোগ্য এবং সব দলকেই সেটি মেনে চলা উচিত।

তাঁর মতে, রাজনীতি কোনও হালকাভাবে নেওয়ার বিষয় নয়; এটি মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত এক গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল, সাহসী ও অংশগ্রহণমূলকভাবে রাজনীতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য একটি সুন্দর নির্বাচন ও উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠার সম্ভবনা রয়েছে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, যিনি বলেন, যদি ডাকসুর মতো ফল অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে হয়, তখনো এর কোনো কারণ নেই চিন্তার। এ নির্বাচনকে সামগ্রিক জাতীয় রাজনীতির সফলতা বা ব্যর্থতার পরিমাপক মনে করা ভুল হবে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটারের বিপরীতে মাত্র ৩২ হাজার ভোটের অর্থ, এটি অনেকটাই সামুদ্রিক একফোঁটা পানির মতো।

অন্যদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন মন্তব্য করেন, স্বৈরশাসনের পরিচালনায় দুর্বৃত্তায়িত শাসন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে গুম-খুন, আয়নাঘরসহ নানা ব্যাধি জন্ম নিয়েছে। এ জন্য যে কাঠামো ও আইনগত সংস্কার প্রয়োজন, এটি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আবশ্যক। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যে আকাক্সক্ষা ছিল, সেই আন্দোলনের অংশীদাররাই এখন অন্যায়ভাবে শক্তি সঞ্চালন করছে।

অবশেষে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে ও অন্যান্য বিশিষ্ট বক্তাদের অংশগ্রহণে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যারা গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo