1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

ফ্রান্সে আন্দোলন চরমে: সরকার বিরোধী বিক্ষোভে আটক ২ শতাধিক

  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফ্রান্সে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকার বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছে। রাজধানী প্যারিসসহ দেশের বিভিন্ন শহরে এই আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, যার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২শ’র বেশি আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। প্যারিস ছাড়াও অন্যান্য বড় শহর যেমন লিওন, ন্যান্টেস, গ্রেনোবল, লিল, কেন ও তুলুসের মতো শহরগুলোতে তীব্র আন্দোলনের ঝড় বইছে, যেখানে শহরগুলোতে অচলায়তন সৃষ্টি এবং যানবাহনের চলাচল বন্ধের মতো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের জন্য মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্য সংখ্যা কম হয়নি; অন্তত ৮০ হাজার পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। এই আন্দোলন এদিন ‘ব্লোকঁ তু’ বা ‘সবকিছুকেই বন্ধ করে দাও’ কর্মসূচির আওতায় শুরু হয়, যা মূলত তরুণদের দ্বারা পালন করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে চায়, যা দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ফরাসি সংবাদমাধ্যম লো মঁদ জানায়, আন্দোলনকারী যারা শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আটক হতে শুরু করে, তারা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ, রাস্তা জ্বালিয়ে দেওয়াসহ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। অনেক বিক্ষোভকারী পুলিশের মুখোমুখি হয় এবং সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই আন্দোলনের মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কঠোর নীতিমালা এবং বাজেট কাটছাঁটে ক্ষুব্ধ জনতা। সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে এখন এই বিক্ষোভের গতি বাড়ছে, যারা দাবি করছে, সরকারের বাজেট পরিকল্পনা ও ব্যয় সংকোচনের নীতির বিরুদ্ধে তারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। গত সোমবার সংসদে আস্থা ভোটে হেরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া বায়রু। এর ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়ে, আবার বরাবরের মতোই দেশের অর্থনীতি ও বাজেট ঘাটতি বিষয়টিও এক বিশাল ভূমিকা রাখছে। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, বুধবার এক ঘণ্টার মধ্যে ২০০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পশ্চিমাঞ্চলের রেনে শহরে এক বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ-পশ্চিমের রেললাইনে ক্ষতি হয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ব্রনো রেতাইয়ো প্রকাশ করেন, এই আন্দোলন এক পরিকল্পিত পরিবেশ তৈরির চেষ্টার অংশ, যেখানে অনলাইনে সংগঠিত হয়ে কিছু বামপন্থি রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা দেশের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ও বৈষম্যের বিরোধিতা করছে। এই আন্দোলনের সূচনায় ছিল একটি ছোট অনলাইন গ্রুপ ‘লেস এসেনটিয়েলস’, যারা জানিয়েছিল, ১০ সেপ্টেম্বর সবকিছু ব্লক করে দেয়া হবে। সরকারবিরোধী এই প্রচেষ্টাকে উচ্চোক্ত করেছে বামপন্থি সংগঠন ফ্রান্স আনবোউড। মূলত বাজেটের ব্যয় সংকোচন ও সামাজিক বৈষম্যের বিরোধিতায় এই আন্দোলন তীব্রতা পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ব্যয় সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ শুরু হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যান প্রধানমন্ত্রী বায়রু। এরপর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবাস্টিয়ান লোকনুর নাম ঘোষণা করেন ম্যাক্রোঁ। অনেক বিক্ষোভকারী মনে করছেন, ম্যাক্রোঁর উচিত ছিল সংসদ ভেঙে দেওয়া বা বামপন্থি একটি নেতাকে প্রধানমন্ত্রী করা। তবে তিনি তার ঘনিষ্ঠজনকেই এই দায়িত্ব দিয়েছে, যা তারা হতাশাজনক বলছে। এই পরিস্থিতি এখন সরকারের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে, দেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক অসন্তোষের আগুন আরও প্রবল হয়ে উঠছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo