গত বছর ১৫ জুলাই ঢাবি ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বি। এই ঘটনা ঢাকার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এবার ডাকসু নির্বাচনে তিনি গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকের পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার সম্মানে, এই পদে কোনও প্রার্থী দেয়নি ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদসহ মোট পাঁচটি প্যানেল। এরা হলো- বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিরোধ পর্ষদ, জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ এবং মাহিন সরকার নেতৃত্বাধীন সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ, এবং অপরাজেয় ৭১ প্যানেল। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, এই পদে তন্বির প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাদের সংগঠনের কেউ মনোনয়ন দেয়নি, বরং ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাকে সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে। এর আগে, গত সোমবার ফেসবুকে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের এক পোস্টে জানান, এই পদে তাদের প্যানেলে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তিনি উল্লেখ করেন, তন্বি আমাদের জুলাইয়ের বিক্ষোভ ও প্রতিরোধের প্রেরণা; তাই গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদকের পদটি শূন্য রাখা হয়েছে এবং তার প্রতি সার্বিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তবে এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা না দিলেও জানা গেছে, প্রতিরোধ পর্ষদ এই পদটি তন্বির জন্য ছেড়ে দিতে পারে। সূত্র জানায়, প্রথমে প্যানেলটি গবেষণা ও প্রকাশনাবিষয়ক অধ্যায়টি বাতিল করতে চায়, যেখানে মনোনীত প্রার্থী সদস্য পদে স্থানান্তর করা হবে। অন্যদিকে, জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ নেতৃত্বাধীন ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বহিষ্কৃত যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারের নেতৃত্বাধীন ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল থেকেও এই পদে কাউকেই মনোনয়ন দিচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালিদ। এছাড়া, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ) এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সমন্বয়ে গঠিত ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেলেও এই পদে কোনও প্রার্থী নেই। বুধবার দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়, যেখানে ব্যক্তিগত বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা। তিনি বলেন, ১৫ জুলাই ঢাবি ছাত্রলীগের হামলায় আহত তন্বির জন্য এই পদে কোনও প্রার্থী ছিল না। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা তার ফেসবুক পোস্টে তন্বিকে শুভকামনা জানিয়েছেন। তবে, তিনি কোনও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন সম্পর্কে এখনও কিছু জানাননি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের’ সাজ্জাদ হোসাইন খান এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল থেকে সিয়াম ফেরদৌস ইমন এই পদে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকবেন। অন্যান্য সংগঠনের ঘোষণা আসলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। গত মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেন তন্বি, তিনি কোনও প্যানেলে যোগ না দিয়ে স্বতন্ত্রভাবে লড়াই করবেন বলেও নিশ্চিত করেছেন। এর কারণ, গবেষণার অভিজ্ঞতা, কাজ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরার জন্য এই পদে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্য তার। তিনি আরও বলেছেন, গবেষণায় শিক্ষার্থীদের জন্য তহবিল নিশ্চিত, বিভিন্ন জার্নালের অ্যাক্সেস দান, কর্পোরেট ও এনজিওর সঙ্গে সমন্বয় করে গবেষণা অর্থ সংগ্রহ, মানসম্পন্ন গবেষণার স্বীকৃতি ও সভা-সেমিনারে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার মাধ্যমে গবেষণাকে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তার লক্ষ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণায় বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা।zochtinvestigatetime.atansearchutzungassistinggroupjson.}