যুক্তরাষ্ট্রে আইন লঙ্ঘন ও ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে গত কিছু মাসে ছয় হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তাদের মতে, এই ভিসা বাতিলের প্রধান কারণের মধ্যে রয়েছে হামলা, মদ্যপান অবস্থায় গাড়ি চালানো, চুরি করা এবং সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতা করার অভিযোগ। তবে, সন্ত্রাসবাদে সহায়তা বা প্রসঙ্গটি মার্কিন কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে জানায়নি।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যারা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ বা সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, তারা ইহুদি বিদ্বেষমূলক আচরণে লিপ্ত ছিলেন।
জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সর্বশেষ সংখ্যাটি স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে আরও ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান। এই পদক্ষেপটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রতি কঠোর মনোভাবের অংশ।
বাতিল হওয়া ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় চার হাজার ভিসা বাতিল হয়েছে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে। এছাড়াও, ২০০ থেকে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল হয়েছে ‘আইএনএ ৩বি’ আইনের আওতায়, যেখানে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা বা সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই আইনে ‘সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ বলতে বোঝানো হয়, এমন কর্মকাণ্ড যা মানুষের জীবনহানির ঝুঁকি সৃষ্টি করে বা মার্কিন আইন ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।
২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে, মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর আরও বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক ছাত্রভর্তি হচ্ছে — অনূমি হিসেবে ১১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশের। এর আগেও, ট্রাম্প প্রশাসন ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি স্থগিত করে ছিল এবং পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট 공개 করে যাচাই প্রক্রিয়া কঠোর করে দেয়। এই নির্দেশনা ছিল, আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টসমূহ বিশ্লেষণের জন্য যেন তারা মার্কিন সংস্কৃতি, সরকার, বা নীতির প্রতি কোনও বিদ্বেষ প্রকাশ করেন কিনা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মে মাসে কংগ্রেসে ঘোষণা দেন, ‘অতীতের মতোই, বিভিন্ন পর্যায়ে ভিসা বাতিলের সংখ্যা বাড়ছে। যারা আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবাঞ্ছিত কার্যকলাপে জড়িত থাকবেন, তাদের ভিসা বাতিল অব্যাহত থাকবে।’ তবে, এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা, যারা এটিকে ‘উপযুক্ত প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
উপসংহারে, জানানো হয়েছে যে, এই ধরনের পদক্ষেপে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দরজা এখনও বন্ধ নয়, তবে সতর্ক ও কঠোর নিয়মনীতি জারির মাধ্যমে দেশটির অভিবাসন নীতি কঠোর হয়ে উঠছে।