বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার (১৯ আগস্ট) এ বিষয়ে সচেতন করে জানায়, গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গভর্নর বলেছেন, তদন্তের প্রক্রিয়া চলমান থাকায় শাহীনুল ইসলাম আপাতত ছুটিতে থাকবেন। তদন্তের শেষ পর্যায়ের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার পক্ষ থেকে গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তাঁকে অবিলম্বে বাধ্যতামূলক ছুটিতে বসানোর দাবি জানানো হয়। এই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিজনক ভিডিও প্রকাশ পাওয়ায় ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাতের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের আপত্তিকর কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এই ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত শুরু করে। মঙ্গলবার গভর্নরের কাছে এ বিষয়ে তাদের রিপোর্ট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই ঘটনাটি এমন এক সময় সামনে এসেছে যখন সম্প্রতি এনায়েত উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়। এনায়েত উল্লাহ ও তার পরিবারের মোট ৫০টি ব্যাংক হিসাব গত বছর নভেম্বরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে দেয় বিএফআইইউ। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে, ব্যাংক আল-ফালাহর চারটি হিসাব পুনরায় সক্রিয় করে ১৯ কোটি টাকার উত্তোলনের অনুমতি দেয়। তার এই অনিয়মের পেছনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
দুদকের তদন্তে জানা যায়, এনায়েত উল্লাহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতেন। ২৭ মে আদালত এই অর্থের উপর আরও নজরদারি ও ফ্রিজের নির্দেশ দেয়। তবে এখন জানা গেছে, এসব হিসাবের মধ্যে প্রায় ১০১ কোটি টাকার মতো অর্থ থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পেয়ে। অভিযোগ উঠেছে, এই অবৈধ সুবিধার পেছনে নানা অনৈতিক সুবিধার আয়োজন করা হয়েছে।