জুলাই মাসের আন্দোলনের সময় ঢাকার মোহাম্মদপুরে হোসেন নামে এক ট্রাক চালকের মৃত্যু ঘটনার ধারাবাহিক মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক এবং উত্তরা পূর্ব থানার এসআই আতিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার (২০ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ মিজবাহ উর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে আদালতে পলক ও আতিককে গ্রেফতার করার জন্য আবেদন জানানো হয়। উল্লেখ্য, গত ৪ জুন তাদের সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। শুনানির দিন বুধবার এ দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তেমনি কিরণের বিরুদ্ধে ৬ দফা ধার্য্য ছিল এবং তার রিমান্ডের শুনানি আজকেরদিনে অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০ টায় শুনানি শুরু হয়। প্রথমে পলককে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়। এরপর আতিক ও কিরণের মামলার শুনানি চলে। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের বৈধতা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর ১৮ জুলাই সারাদেশে মোট বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছাত্র ও সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। এই সময়ে উত্তরা এলাকায় শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরা হামলা চালায়। হামলাকারীরা গুলি করে প্রাণহানি ঘটায়, বিশেষ করে কিরণ সহ অন্যান্যরা। কিরণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তদন্তের সুবিধার্থে তার রিমান্ডে নেওয়া জরুরি, তাই সর্বোচ্চ সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে, কিরণের পক্ষে আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানান। তিনি বলেন, গত ৪ জুন রিমান্ডের আবেদন করা হলেও আজ প্রায় ১১৭ দিন পরে শুনানি হচ্ছে, যা আইনগতভাবে প্রশ্নাতীত। তিনি জানান, তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন। তাঁর জন্য বর্তমান পরিস্থিতি খুবই কঠিন। তাই রিমান্ড বাতিল করে জামিনের জন্য আবেদন করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এসআই আতিকুর রহমান বলেন, এই আসামিকে আদালতে হাজির করতে ছয়বার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে, কিন্তু অনিবার্য কারণে তার উপস্থিতি সম্ভব হয়নি। জেল সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে। আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
অথচ, আদালত কিরণের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও আতিকের গ্রেফতার দেখানোর আবেদনও অনুমোদন দেন।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানার চার নম্বর সেক্টরে এক ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদসহ অন্যরা অংশগ্রহণ করেন। ওই দিন তিনি ও অন্যরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়। গুলিবর্ষণে ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে, তিনি দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
তাছাড়া, ২৯ অক্টোবর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মোহাম্মদপুরে ১৯ জুলাই গুলিতে ট্রাকচালক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা রিনা বেগম ৩১ আগস্ট মামলা দায়ের করেন।