মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগদানের Aspirations এবং রাশিয়া দখল করা ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শুক্রবার আলাস্কায় আলোচনার পর ট্রাম্প এবার ইউক্রেনকে চাপ দিচ্ছেন। তিনি চান, কিয়েভ শান্তিচুক্তি মেনে নিয়ে যুদ্ধের অবসান ঘটাক। বর্তমানে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত ও হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে এই সংঘর্ষে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রথমে নিজের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক করবেন, এরপর ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ইউরোপীয় নেতারা একযোগে ওয়াশিংটনে গিয়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাতে চান।
রোববার ট্রাম্প তার প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেছেন, জেলেনস্কি যদি চায়, দ্রুত যুদ্ধ শেষ করতে পারেন। আবার চাইলে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ওবামার আমলে ক্রিমিয়া গুলিবিহীন দখল হয়েছে, ন্যাটোও ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।
এদিকে, ইউক্রেন ও তার মিত্ররা আশঙ্কা করছেন, হয়তো ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে কোনো সমঝোতার জন্য চাপ দিতে পারেন। তবে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন, কারণ ট্রাম্প যুদ্ধ শেষের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউক্রেনের ডনেস্ক অঞ্চলের অবশিষ্ট অংশ ছাড়তে হবে। তবে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার পক্ষে। কিন্তু এরপর ট্রাম্প রাশিয়ার দাবির পক্ষে অবস্থান নেন।
জেলেনস্কি রবিবার রাতে ওয়াশিংটনে পৌঁছে বলেছেন, এই যুদ্ধ দ্রুত ও স্থায়ীভাবে শেষ করতে চায় সবাই। রাশিয়া এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাই তারই শেষ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বন্ধুদের সঙ্গে মিলেই শান্তি চান তিনি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হামলায় বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, ইউরোপীয় নেতারা আশঙ্কা করছেন, পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকে তাদের বাইরে রাখা হয়েছে বলে। তাই তারা আগে থেকেই জেলেনস্কির সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল বলেছেন, বিশ্ব এখন ওয়াশিংটনের দিকেই তাকিয়ে আছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে কিয়েভ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অনেকটাই গড়বড়। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকায় জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।