1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ভর্তুকি লাগবে ৩ হাজার কোটি টাকা

  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি লাগবে। আগামী বাজেটে এ খাতে এই বরাদ্দ রাখতে হবে। সুদ-ভর্তুকি হিসেবে ওই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংককে দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ ছাড় করবে সংশ্নিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকি মোকাবিলায় ৫ এপ্রিল ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য চলতি মূলধন হিসেবে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে এ ঋণ দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এই প্যাকেজ বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
জানা যায়, এই প্যাকেজের আওতায় শিল্প, সেবা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা- এসব খাতে যে অর্থায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার সবই ঋণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের দেওয়া হবে। তবে ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো ৯ শতাংশ সুদ পাবে। এই ৯ ভাগ সুদের প্রায় অর্ধেক দেবে ঋণগ্রহীতা। বাকি অর্ধেক ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার। সূত্র বলেছে, অর্থ মন্ত্রণালয় হিসাবে করে দেখেছে ঋণনির্ভর এই প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে হলে সুদ ভর্তুকি বাবদ সরকারের বাড়তি তিন হাজার কোটি টাকা লাগবে। বর্তমানে কৃষি, বিদ্যুৎ, রপ্তানিসহ অন্যান্য খাতে ভর্তুকি বাবদ সরকারের মোট ব্যয় হয় বছরে ৩০ থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণে এখন নতুন করে বাড়তি তিন হাজার কোটি টাকা যোগ হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, পূর্ণাঙ্গ প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন হলে ভর্তুকি লাগবে বাড়তি তিন হাজার কোটি টাকা। এতে বাজেট বাস্তবায়নে কোনো চাপ আসবে কিনা জানতে চাইলে বলেন, একটু তো আসবেই। তবে এটা সহনশীল। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে খরচ কমিয়ে সাশ্রয়ী অর্থ এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর টাকা লাগবে না। কারণ, ঋণ বিতরণ করা হবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে। ব্যাংকগুলো সাধারণত তিন থেকে ছয় মাসের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। ফলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এর জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে না। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এদিকে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারা বলছেন, তারল্য সংকটের মধ্যে তারা ঋণ দেবেন কীভাবে? তাদের পরামর্শ হচ্ছে, সরকারকেই এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে বড় আকারে পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি নিতে হবে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংককে একীভূত করতে হবে। এর ফলে ঋণ বিতরণের সক্ষমতা বাড়বে। তারা আরও বলেন, ঘোষিত প্রণোদনায় সরকারি ব্যয় ও মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এতে করে মূল্যস্টম্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে সরকারকে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনার অর্থ কীভাবে দেওয়া হবে, কারা পাবেন- এ বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। নতুবা ক্ষতিগ্রস্তরা এর সুফল পাবে না। ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মোকাবিলায় পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি চালু করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এই কর্মসূচি থেকে ব্যাংকগুলোকে নামমাত্র সুদে ধার দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে আরও বেশি গরিব মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার পরামর্শ দেন তিনি।
বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। প্রণোদনার প্যাকেজের কারণে ঋণ বিতরণের চাহিদা আরও বাড়বে। ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ঋণ নেই। ফলে টাকা কোথায় পাবে ব্যাংকগুলো? তিনি মনে করেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন হাতিয়ার (টুলস) ব্যবহার করে পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে অনেক ছোট ব্যাংক আছে যেগুলোর অবস্থা ভালো নয়। ওই সব ব্যাংককে একীভূত করতে হবে এবং এখন থেকেই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo