1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১০:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

আর্থিক সংকটে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকল

  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে। বর্তমানে পাটকলগুলোর দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৩২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি, বেতন, পিএফ, গ্র্যাচুইটি, পাট ক্রয়ের দেনা এবং ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে দেনায় জর্জরিত পাটকলগুলো।

দেনার কারণে নিয়মিত শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে পাটকলগুলো। এদিকে পাটকলগুলোতে বর্তমানে ২৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার পাটপণ্য মজুত রয়েছে। আর্থিক সংকটে থাকা পাটকলগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

অপরদিকে বকেয়া মজুরি প্রদান ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছেন শ্রমিকরা। গত ১৭ নভেম্বর কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর আমরণ গণঅনশন কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে তাদের। তবে, সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি ও বেতন বাবদ ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। গত ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে। গত বুধবার থেকে শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের বকেয়া পাওনা পেতে শুরু করেছেন।

বিজেএমসি সূত্র জানায়, খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম, ইস্টার্ন, জেজে আই ও কার্পেটিং জুট মিলের বেতন বাবদ ১৪ কোটি ২৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা, মজুরি বাবদ ৪৮ কোটি ১৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, পিএফ বাবদ ৯২ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, গ্র্যাচুইটি বাবদ ২৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, পাট ক্রয়ের দেনা বাবদ ১৭৩ কোটি ৭০ লাখ ৫ হাজার টাকা, ব্যাংকের দেনা ৫৬২ কোটি ১৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৬৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেনা রয়েছে। সব মিলিয়ে মিলগুলোর দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৩২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, পাটকলগুলোতে বর্তমানে উত্পাদিত মজুদ পণ্য রয়েছে ৩০ হাজার ২০৭ টন। যার আনুমানিক মূল্য ২৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। উত্পাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ার কারণে মিলগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়মিত মজুরি ও বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন বাবদ বকেয়া রয়েছে ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের ১০ সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করা হবে। যার মধ্যে ব্যাংকে পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বুধবার এসে পৌঁছেছে। আজকালের মধ্যে আরো পাঁচ সপ্তাহের মজুরিও পরিশোধ করা হবে।

প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, পাটকলগুলো আর্থিক সংকটে থাকায় শ্রমিকরা কাজ করেও নিয়মিত মজুরি পাচ্ছে না। তবে গত বুধবার থেকে সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা থেকে প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহের মজুরি প্রদান করা হচ্ছে। যা শ্রমিকরা পেতে শুরু করেছে। তিনি জানান, ১১ দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ গণঅনশন চলবে।

স্টার জুট মিলের প্রকল্প প্রধান রইজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, মিলের শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহ আর কর্মচারীদের দুই মাসের বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে। গত বুধবার থেকে শ্রমিকরা ব্যাংক থেকে তাদের টাকা উত্তোলন করছে। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) খুলনা অঞ্চলের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা মো. বনিজ উদ্দিন মিয়া বলেন, খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলোর সার্বিক তথ্য বিজেএসসিতে প্রেরণ করা হয়েছে। পাওনা সাপেক্ষ পর্যায়ক্রমে দেনা পরিশোধ করা হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo