1. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবরঃ

ভারতের কাছ থেকে ১৯৪ একর জমি পেল বাংলাদেশ

  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৬

মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী ও পাল্লাতল সীমান্তে বিরোধপূর্ণ ও অপদখলীয় ১৯৪ একর জমির মালিকানা পেয়েছে বাংলাদেশ। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছে। এখন সেখানে নতুন করে সীমান্ত খুঁটি স্থাপন হবে। আর পাল্লাতলে সীমন্ত খুঁটি স্থাপনের স্থান নির্ধারণের কাজ চলছে। সেখানে অপদখলে থাকা অংশ থেকে প্রায় ৭৪ একর জমি বাংলাদেশ পেয়েছে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ জরিপ দল সম্প্রতি লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী সীমান্তে সীমানা চিহ্নিতকরণ ও সীমান্তখুঁটি স্থাপনের স্থান নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করে।
ভূমি রেকর্ড জরিপ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী সীমান্তের ১৩৯৭ নম্বর প্রধান খুঁটি থেকে ১৪০০ নম্বর প্রধান খুঁটির ১ নম্বর আর আই (ভারত অংশের খুঁটি) ও ২ নম্বর আর বি (বাংলাদেশ অংশের খুঁটি) খুঁটির মধ্যবর্তী এলাকায় কোনো সীমান্তখুঁটি নেই। সেখানকার প্রায় ১২০ একর জায়গার মালিকানা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। জায়গাটি বাংলাদেশের দখলে রয়েছে। লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী গ্রামে ৭০টি পরিবার বসবাস করে। ওই সীমান্তের বিপরীতে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলা। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ জরিপ দল বিরোধপূর্ণ জায়গাটি জরিপ করে। জরিপকাজ শেষে যৌথ জরিপ দল নির্দেশক মানচিত্রে (ইনডেক্স ম্যাপ) স্বাক্ষর করে। এরপর সীমান্ত প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে বলা হয়, সীমান্তখুঁটি না থাকায় লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী (আসাম), পশ্চিমবঙ্গের দইখাটা ৫৬ ও ত্রিপুরার মুহুরি নদী-বিলোনিয়া সীমান্তে সীমানা চিহ্নিত করার কথা বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ীতে সীমানা চিহ্নিত করে সীমান্তখুঁটি স্থাপনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। গত ২৮ ডিসেম্বর ভূমি রেকর্ড জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল জলিল সীমান্তখুঁটি স্থাপনের জন্য বাজেট বরাদ্দ করে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি চিঠি দেন ।
সীমানা চিহ্নিত করার দায়িত্বে থাকা চার্জ অফিসার ও ভূমি রেকর্ড জরিপ অধিদপ্তরের কানুনগো আবদুল হক গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী সীমান্তে সীমানা চিহ্নিত করার পর বাংলাদেশ ১২০ একর জমি পেয়েছে। লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী গ্রামটি ওই জমির ভেতরেই পড়েছে। নতুন সীমানায় সীমান্তখুঁটি স্থাপনে স্থান নির্ধারণের কাজও সম্পন্ন হয়ে গেছে। সেখানে বাংলাদেশ অংশে ১৪টি সীমান্তখুঁটি স্থাপন করা হবে। এখন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব খুঁটি স্থাপন করা হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, পাশের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল সীমান্তে ৩৬০ একর জায়গা বাংলাদেশের অপদখলে ছিল। যৌথ জরিপে ওই সীমান্তের ১৩৭০ নম্বর প্রধান সীমান্তখুঁটির ৩ নম্বর উপখুঁটি থেকে ১৩৭১ নম্বর প্রধান সীমান্তখুঁটির ৬ নম্বর উপখুঁটির ভেতরে ৫৮ দশমিক ৪৪ একর এবং ১৩৭২ নম্বর প্রধান সীমান্তখুঁটি থেকে ১৩৭৩ নম্বর প্রধান সীমান্তখুঁটির ২ নম্বর উপখুঁটির ভেতরে ১৫ দশমিক ৬৫ একর জমি বাংলাদেশ পেয়েছে। সেখানে নতুন সীমান্তখুঁটি স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ জরিপ দল কাজ করছে।
গতকাল বিকেলে এই প্রতিবেদক লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী গ্রামে গেলে সেখানকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘৪০-৫০ বছর ধরে এ গ্রামে থাকি। জায়গাটা নিয়া দুই দেশর মধ্যে কয়েকবার যুদ্ধ হইছে। এর মধ্যেও জায়গা ছেড়ে আমরা অন্য কোনো জায়গায় যাইনি। জায়গাটার মালিকানা বাংলাদেশ না ইন্ডিয়া পাইব—এই চিন্তাতেই এত বছর কাটছে। দীর্ঘদিনের বড় একটা সমস্যার ফয়সালা হয়ে গেল। জায়গাটা পাওয়ায় গ্রামের সবাই খুশি। তার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ী সীমান্তে সীমান্তখুঁটি স্থাপনে বাজেট বরাদ্দের চিঠিটি তাঁর নজরে পড়েনি। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সকালেরফেনি.কম
Design & Developed BY HostingNibo