ঢাকায় কর্মরত খুলনা বিভাগের সাংবাদিকদের সংগঠন খুলনা বিভাগীয় সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার আয়োজনে সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি ছিল ‘খুলনা বিভাগের সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনাসভায়। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বিষয়, বিনিয়োগ, পরিবেশ সংরক্ষণ, শিল্প-বাণিজ্য উন্নয়ন ও অবকাঠামোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলোচনা হয়। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল খুলনা বিভাগের সংকটগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে তার সমাধানকল্পে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ। এতে অংশ নেন সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা। গোলটেবিলের সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু। সাধারণত সদস্য নাসির আহমাদ রাসেলের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক সচিব ও সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। আলোচনা মূলত খোলামেলা ও গঠনমূলক হয়, যেখানে বক্তারা তুলে ধরেন বিভিন্ন সংকট ও সম্ভাবনার কথা। বক্তারা উল্লেখ করেন, জাতীয় অর্থনীতিতে খুলনা বিভাগের অবদান ৩২ শতাংশ হলেও এখানকার উন্নয়ন বেশ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমানে এই বিভাগে ১০ জেলা, ৫৯ উপজেলা ও ৫৬৮ ইউনিয়ন রয়েছে। এই অঞ্চল দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেকটাই বৈষম্য, অবহেলা ও নিস্তেজতার শিকার। উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। তাই উপকূলের জন্য স্থায়ী ভেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান বোর্ডের সদস্যরা। তারা আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি হয়, ফলে হাজার হাজার একর জমির মালিকরা হয় Fakir বা দরিদ্র। এখানকার মানুষদের আত্মউন্নয়নের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে ও শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। বৈঠকে খুলনা বিভাগে গভীরে সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য কার্যকর পরিকল্পনা, উপকূলীয় উন্নয়ন ও সমুদ্র সুরক্ষায় বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এছাড়াও বোর্ড গঠন ও পেশাজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, খুলনার উন্নয়ন সম্ভব যদি সংগঠিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন। তারা প্রত্যাশা প্রকাশ করেন, এখানকার সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ও দৃষ্টি নখর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, খুলনা পার্বত্য, নদীপথ ও স্থলবন্দর দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, যদি সঠিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই আলোচনা ভবিষ্যতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে দেশের উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।